ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

সরকারি হাসপাতালের ভবনে প্রাইভেট ক্লিনিক !

%e0%a6%af%e0%a6%af%e0%a6%afইমরান হোসাইন, পেকুয়া :::

পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ডাক্তারদের জন্য বরাদ্দকৃত ভবনকে প্রাইভেট ক্লিনিক হিসেবে ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা. নুরুল আলমের বিরুদ্ধে।

দ্বিতল ভবনের ৪টি কক্ষ দখলে নিয়ে একটিতে আবাসন ও অন্য তিনটিতে ৬টি আসন বসিয়ে চিকিৎসা বাণিজ্যে মেতেছেন তিনি। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ও কর্মচারীদের যোগসাজসে সরকারি হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীদের একপ্রকার বাধ্য করে নিয়ে যাচ্ছেন তার প্রাইভেট ক্লিনিকে।
এদিকে ক্লিনিকটি বন্ধ করতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাসিক সভায় ওই চিকিৎসকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান। তারপরও চলছে গলাকাটা এই বাণিজ্য।

এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু বলেন, বিষয়টি নিয়ে মাসিক সভায় আলোচনা করা হয়েছে। এরপরও ওই চিকিৎসক তার বাণিজ্য বন্ধ করেননি। তবে পরবর্তী সভার আগে যদি তিনি ক্লিনিক বন্ধ না করেন তাহলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নালিশ জানানো হবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই ভবনে গিয়ে দেখা যায়, ডক্টরস কোয়াটারের দ্বিতীয় তলার ৪টি কক্ষই ডা. নুরুল আলমের দখলে। এর মধ্যে একটিকে তিনি শয়নকক্ষ হিসেবে ব্যবহার করেন।  বাকি ৩টি কক্ষই তিনি প্রাইভেট ক্লিনিক হিসেবে ব্যবহার করছেন। দ্বিতীয় তলা রোগী ও অভিভাবকে গিজগিজ করছে। প্রতিটি আসনে রোগী রয়েছেন। রোগীর সেবা দিতে রাখা হয়েছে সহকারীসহ ৩ জন কর্মচারী।

এসময় রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের মধ্যে অধিকাংশই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। কিন্তু হাসপাতাল থেকে তাদের এখানে পাঠানো হয়েছে। কে পাঠিয়েছে তা জানতে চাইলে কেউ সদুত্তর দিতে পারেননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই সরকারি হাসপাতালের এক সাবেক চিকিৎসক জানান, পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডাক্তার মুজিবুর রহমানের সাথে গোপন আঁতাতে চলছে ডাক্তার নুরুল আলমের ক্লিনিক বাণিজ্য।

এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত রেসিডেন্সিয়াল মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার নুরুল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডাক্তার মুজিবুর রহমান বলেন, ডা. নুরুল আলম ১১ হাজার টাকায় ওই ৪টি কক্ষ ভাড়া নিয়েছেন। তবে তিনি ক্লিনিক নয় সেখানে ব্যক্তিগত চেম্বার খুলেছেন বলে দাবি করেন।

তিনি আরো বলেন, ডাক্তার নুরুল আলমকে পেকুয়ায় সার্বক্ষণিক পাওয়া যায়। তিনি ডিউটি টাইম শেষে ক্ষুদ্র পরিসরে নিজের বাসায় রোগীদের সেবা দিয়ে থাকেন।  এটা দোষের কিছু নয়।

কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জন ডা. পূচণূ বলেন, ওই চিকিৎসকে সরকারি ভবন থেকে তার ক্লিনিক সরিয়ে নেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: